নিউজ ডেস্ক ::
‘দুর্ব্যবহার’ ও ‘খাবার না পেয়ে’ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন ‘বৃক্ষমানব’ বলে পরিচিত আবুল বাজানদার।
হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিবিসিকে জানান, তাদের রোগী কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন, তার কোনো কারণ সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত হতে পারছেন না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার জানতে পারে, আবুল বাজানদারের নির্ধারিত কেবিনটি ফাঁকা পড়ে আছে।
দুই বছর চিকিৎসা নেয়ার পর আবুল বাজানদার কেন হাসপাতালে থাকতে চাইছেন না, সে সম্পর্কে ড. সামন্ত লাল বলেন, তার সঙ্গে কে বা কারা নাকি দুর্ব্যবহার করেছে এবং খাবার দিচ্ছে না। সেই জন্য তিনি হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।
এ ব্যাপারে আবুল বাজানদারের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘কিন্তু কে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে বা কে তাকে খাবার দিচ্ছে না- এ ব্যাপারটা সে আমাকে জানাতে পারত। আমি দেখতাম কোন ডাক্তার বা নার্স এর জন্য দায়ী। কিন্তু সে কাউকে কিছু না জানিয়ে যে এভাবে চলে যাবে, তা মোটেই আশা করিনি।’
আবুল বাজানদার গত ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে উঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছিলেন। গত দুবছরে তার ওপর মোট ২৫ দফা অস্ত্রোপচার চালানো হয়েছে।
দীর্ঘ সময়ে হাসপাতালে আটকে থাকার আশঙ্কা থেকেই আবুল বাজানদার চলে যেতে পারেন কিনা, সে সম্পর্কে ডা. সামন্ত লাল বলেন, তার রোগটি যে আবার ফিরে আসতে পারে এই কথাটি তিনি রোগীকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
নিয়মিত চিকিৎসা না হলে তাকে আগের মতো পরিস্থিতিতেও পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল জানান, সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই আবুল বাজানদারের জন্য তারা হাসপাতালে চাকরির কথাও ভাবছিলেন।
খুলনার পাইকগাছার বাসিন্দা আবুল বাজানদারকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। তার সব অপারেশন বিনামূল্যে করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবুল বাজানদার এবং তার পরিবারের বিনাখরচায়ে থাকা-খাওয়া এবং ওষুধপত্রের ব্যয় বহন করে।
পাঠকের মতামত: